পিরিয়ড নিয়ে রিয়ানার অভিজ্ঞতা

রিয়ানা এবারে নবম শ্রেণিতে উঠেছে। প্রতিদিন রিয়ানা স্কুলে যায়। শিক্ষকরা রিয়ানাকে খুব ভালোবাসে। তার কারণ,রিয়ানা যেমন মেধাবী তেমন সাহসী আর বুদ্ধিমতি। একদিন রিয়ানার স্কুলে একটি বড় গাড়ি আসলো। সব ছাত্র-ছাত্রীরা উৎসুক হয়ে তাকিয়ে আছে। গাড়ি থেকে কিছু লোক নেমে গাড়িতে থাকা জিনিসপত্র নামালো। রিয়ানা খেয়াল করলো গাড়িতে পোস্টারে সেনোরা প্যাডের বিজ্ঞাপন দেওয়া। রিয়ানা ধারণাও করেছিলো ওরা প্যাডের বিজ্ঞাপন নিয়ে কিছু একটা করতে এসেছে।

সব ছাত্র-ছাত্রীরা গোল হয়ে দাড়ালো। স্কুলের শিক্ষকরাও এসে বসলেন। বিজ্ঞাপন করতে আসা একটি মেয়ে মাইক নিয়ে কথা বলতে শুরু করেছে। হঠাৎ মেয়েটি বললো কে এখানে এসে নিজের প্রথম পিরিয়ড হওয়ার ঘটনা শুনাবে? সব ছাত্র-ছাত্রী চূপ হয়ে রইলো। সাতপাঁচ না ভেবেই সাহসী মেয়ে রিয়ানাই দৌড়ে মেয়েটির কাছে যায়,আর বলে,”আমি বলতে পারবো” বিজ্ঞাপনের মেয়েটি মিষ্টি হেসে বললো,”ঠিকাছে” এই বলে রিয়ানাকে মাইক্রোফোনটা হাতে দিলো। রিয়ানা বলতে শুরু করলো,”আমার যখন পিরিয়ড হয় তখন আমি ক্লাস সিক্সে। তখন আমি ওসব সম্পর্কে কিছু জানতাম না৷

যখন প্রথমবার ব্লাড দেখতে পাই,খুব ভয় পেয়ে যায়, কেঁদে ও দিয়েছিলাম। মা’কে গিয়ে সব খুলে বললাম। মা মিষ্টি হেসে বললো,”পাগলি মেয়ে আমার। কাঁদতে হবেনা। এটাকে বলে পিরিয়ড। এটি প্রতিমাসে একবার হয়। সব মেয়েদেরই এটা হয়৷ এই সময়ে অনেক সচেতন থাকতে হয়। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হয়। ভালো পুষ্টিযুক্ত খাবার,ফলমূল খেতে হয়” এগুলো বলে মা আমাকে সব শিখিয়ে দেয় কি কি করতে হবে। পরদিন আমার খুব পেটে ব্যথা হয়। মা’কে আবার বললাম। মা’ বললো গরম পানির শেক দিলে চলে যাবে। এগুলো হয় স্বাভাবিক। এগুলো নিয়ে এত চিন্তা করার কিছু নেই।

মা আমাকে অনেক যত্ন করতো। পিরিয়ডের দিনগুলোতে আরো বেশি যত্ন করতো।এই বলে রিয়ানা মাইক্রোফোনটা নামায়। উপস্থিত সকলে রিয়ানার সাহসীকতা দেখে হাততালি দেয়। তারপর শিক্ষিকারা ও বক্তব্য দেয় পিরিয়ড সম্পর্কে। তারপর বিজ্ঞাপনদাতারা সব ছাত্রীদের বলে খাতা-কলম নিতে।সব ছাত্রীরা খাতা কলম নেওয়ার পর ওরা কিছু পরামর্শ দেয়,আর কিছু জিনিস নতুন করে শিখিয়ে দেয় ওসব লিখে নিতে বলে। ছাত্রীরা সবাই সেগুলো লিখে নেয়। তারপর বিজ্ঞাপনদাতারা সবাইকে ওসব মেনে চলতে বলে। আরোও কিছুক্ষণ থেকে সব ছাত্রীদের একটা করে সেনোরা প্যাডের প্যাকেট দিয়ে চলে যায়।

লেখক : মারিয়া হাসান, শিক্ষাথী